ডেস্ক রিপোর্ট : ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের সাতারখালি খাল উপ প্রকল্পের( জাইকা) সুইচ গেইট নির্মাণ কাজের বেজ ঢালাই কাজ গত ৪ ডিসেম্বর সকাল থেকে শুরু হয়েছে। সকাল আট ঘটিকা হতে এ ঢালাই কাজ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা অবদি। ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আগামী জুন মাসের মধ্যে নির্মিত হতে যাচ্ছে। সমিতির ঘরসহ সুইচ গেইটটি । ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্বর্ণা ব্রিকস এ প্রকল্পের কাজ করছে । প্রকল্প কাজের শুরু থেকেই নানা অনিয়মের খবর শোনা গেলেও বাস্তবে তার প্রমাণ মিলে। বেজ ঢালাইয়ে অনিয়ম চলছে এমন খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গেলে ধরা পড়ে আসল চিত্র। নিম্ন মানের মিশ্রিত পাথর দিয়ে চলছে ঢালাইকাজ। শুধু তাই নয় পাথরের ঢিবির ভিতর আবিষ্কার করা হয়েছে প্রচুর বালি। আর এই বালি মিশ্রিত পাথর দিয়েই দেদারছে চলছে ঢালাইয়ের কাজ। অবশ্য এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঠিকাদার মো: শাহজাহান, জাইকা-ময়মনসিংহের সহকারী প্রকৌশলী মো: আজহার উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়-ময়মনসিংহের সহকারী প্রকৌশলী মো: আনোয়ার হোসেন, ধোবাউড়া প্রকৌশল অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো: মকবুল হোসেন, ধোবাউড়া-জাইকার সিএস মো: আব্দুর রউফ , কার্য সহকারী মো: পিন্টু মিয়া, প্রকল্প কমিটির সভাপতি সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
ভালো পাথরের নিম্নমানের পাথরের মিশ্রণের বিষয়ে ঠিকাদার মো: শাহজাহানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিভিন্ন ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে এ জবাব দেওয়ার চেষ্ঠা করেন। পরে ঢিবির ভিতরে বালি আবিষ্কারের পর জাইকা-ময়মনসিংহের সহকারী প্রকৌশলী মো: আজহার উদ্দিন বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: হুকুম আলীর উপস্থিতিতে পাথরের ঢিবির ভিতর বালির অস্তিত্ব সনাক্ত করা হয়। এ সময় ইউপি সদস্য হুকুম আলী রড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পাথরের নিচ থেকে বালি বের করেন এবং ক্যামেরার সামনে তা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ধোবাউড়া-জাইকার সিএস মো: আব্দুর রউফ প্রতিবার কংক্রিট মিশ্রণে পাথর, বালি ও সিমেন্টের(ঝুঁড়ির মাপে) অনুপাত ৫:৪:১ বলে জানালে বাস্তবে অবশ্য তার সত্যতা পাওয়া যায়। তাছাড়াও ঢালাই কাজে রড গুলো নির্দিষ্ট মাপের চেয়ে অধিক দূরত্বে বসানোর প্রমাণ মিলেছে।
ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: নুরে আলম জানান, আমার কাছে ঢালাই কাজে নিম্ন মানের রড এবং পাথর ব্যবহার হচ্ছে এমন খবর আস্লে আমি ঘটনাস্থলে গেলে ঠিকাদারের কিছু লোক আমার সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ফলে সাংবাদিক সহ অন্যান্যদেরকে বিষয়টি অবহিত করি। সুইচ গেইটটি আমার নির্বাচনী এলাকার বিধায় এখানে কোন প্রকার অনিয়ম হোক তা হতে দেব না।
অপরদিকে ধোবাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো: বাবলু মিয়াকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানালে তিনি পাথরের ঢিবি থেকে বালি সরানোর ব্যাপারে আশ্বস্থ করেন এবং বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। অবশ্য এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা সন্ধ্যা অবদি ঢালাইকাজের শেষ পর্যন্ত জানা যায়নি ।
পরদিন সকাল আটটা থেকে আবারো ঢালাইয়ের কাজ শুরু হলে সেখানে দৈনিক দিগন্তবাংলা পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মো: ইকবাল কবির (মানিক) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান বালিমিশ্রিত পাথরের ঢিবি প্রায় শেষের পথে। অবশ্য আগেরদিন যারা ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন তাদের সামনেই এসব অনিয়ম চললেও অজ্ঞাত ক্ষমতাবলে কোন প্রতিবাদ তোয়াক্কা করছেন না। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্ঠা চলছে বিধায় ঢালাইকাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে রাখা হয়েছে।
বর্তমাণে তাড়াহুড়ো করেই চলছে ঢালাইকাজ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢালাইকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে বিশেষ সূত্র নিশ্চিত করেছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্বর্ণা ব্রিকস এর ঠিকাদার মো: শাহজাহান মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে জেলা প্রকৌশল অফিস সহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে এভাবে নিম্নমানের কাজ করেই প্রকল্পের অর্থ ছাড় করিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিবেন এমনটাই সন্দেহ করছেন এলাকার সচেতন মহল।
এদিকে ধোবাউড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়কে নির্মাণকাজেও ব্যাপক অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট মহল গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করবেন এমনটাই চায় ধোবাউড়ার সাধারণ জনগণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন