স্টাফ রিপোর্টার: ধোবাউড়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নে কারিতাস কর্তৃক পরিবার ও গ্রাম পর্যায়ে দুর্যোগের ঝুকিঁ হ্রাস প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন পরিবারগুলোর মধ্যে ১৮০টি গৃহ নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। এসব গৃহনির্মাণ প্রকল্পের তালিকা প্রণয়নের সময় থেকেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর লোকমুখে প্রচার হওয়ার পর সরেজমিনে ঘোষগাঁও ইউনিয়নের ভূইয়াপাড়া গ্রামে গেলে অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা মেলে। গৃহ নির্মাণের জন্য যে পিলার নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং পিলারগুলোর দুই প্রান্তে তিনটি করে রড দেখা গেলেও বাস্তবে মাঝখানে রয়েছে মাত্র দুটি রড। ফলে সামান্য নড়াচড়াতেই এগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। ভূইয়াপাড়া গ্রামের আদিবাসীদের বাবু বলে পরিচিত আব্দুল খালেক জানান, " গ্রামে যে গাছ দিয়ে সবজি ক্ষেতের বেড়ার খুটি দেয়া হয় সেই জিগার গাছের খাপ, নিম্নমানের সাদা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে চাল নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, "কয়েকদিন আগে অত্র ইউনিয়নের মুচারপাড়া গ্রামে নিম্নমানের কাঠ ও বাঁশের চালে টিন লাগাতে গিয়ে এক মিস্ত্রি ঘরের চাল ভেঙ্গে পড়ে গিয়ে মাথায় ও হাতে আঘাত পেয়ে আহত হয়। আমি এলাকার অসহায় মানুষদের পক্ষে তাদের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে মাননীয় সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।" নিম্নমানের খুটি দিয়ে ঘর নির্মাণের প্রতিবাদ করে আদিবাসী মহিলা রহেলা রংদি বলেন, "এ পালা দিয়া আমার ঘর বানানো সম্ভব না আর এই ঘরে হান্দাই থাহাও সম্ভব না। তাইলে মরণ লাগব।" এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ প্রকল্পের একাংশের ঠিকাদার রফিক এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকায় কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। অত্র ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো: দেলোয়ার হোসেন জানান, নিয়মানুযায়ী ইউপি সদস্যদের গৃহনির্মাণ প্রকল্প কমিটিতে রাখার কথা থাকলেও কোন ইউপি সদস্যকেই প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। উক্ত প্রকল্পের ইউনিয়ন সভাপতি ফ্রান্সিস চিসামকে প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যেসব পিলার বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে সেগুলো আবার নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে তিনি পিলারের ভিতরের অংশে মাত্র দুটি রড এবং নিম্নমানের কাঠ নিয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বৈদেশিক অর্থায়নে বায়স্তবায়িত কারিতাসের এই দুর্যোগের ঝুকিঁ হ্রাস প্রকল্পের নামে নির্মাণাধিন ঝুকিঁপূর্ণ গৃহ যাতে দু:স্থ জনগনের জানমালের জন্য হুমকীর কারণ না হয় সেজন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন গৃহহীন দু:স্থ-অসহায় পরিবারগুলো। সূত্র: অলোকিত ময়মনসিংহ; তারিখ-৩১-০৫-২০১৫ খ্রি:।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন